গ্রাফিক্স ডিজাইন: নতুনদের জন্য পরিপূর্ণ গাইডলাইন
হ্যালো ক্রিয়েটিভ পিপল! বর্তমান প্রযুক্তির দুনিয়ায় ফ্রিল্যান্সিং কিংবা ইন-অফিস জব যেকোনো ক্ষেত্রেই গ্রাফিক্স ডিজাইনার পদের চাহিদা ও প্রতিযোগিতা অনেক বেশি।
ইতোমধ্যে সকল ধরনের ব্যবসায় তাদের অনলাইন প্রেজেন্স নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে হাজার হাজার অর্থ ব্যয় ও বিভিন্ন টেকনিক অনুসরণ করছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটা অন্যতম মূল টুল হলো ডিজিটাল কন্টেন্ট। আর এই ডিজিটাল কন্টেন্টের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে গ্রাফিক্স বা ইমেজ।
আজকের ব্লগে আমরা জানবো, গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? সেই সাথে নতুনদের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার সম্পূর্ণ গাইডলাইন শেয়ার করবো।
আপনি যদি Graphics Design শিখতে আগ্রহী হয়ে থাকেন এবং এ বিষয়ে তেমন কোনো ধারণা না থাকে, তাহলে সঠিক স্থানে এসেছেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন কি?
গ্রাফিক্স ডিজাইন বলতে বুঝায় বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও টুলস ব্যবহার করে অর্থবহ কোনো মেসেজ প্রদান করে এমন ছবি, ডিজিটাল আর্ট তৈরি কিংবা বিভিন্ন ডিজিটাল কন্টেন্ট ডিজাইন করা।
আমরা নিশ্চয়ই বইয়ের ফ্রন্ট পেইজ, রাস্তার পাশে বিলবোর্ড, নিউজফিডে পণ্যের বিজ্ঞাপন, পণ্যের আকর্ষণীয় মোড়ক কিংবা টিশার্টে বিভিন্ন নান্দনিক নকশা দেখেছি। এগুলোর সবকিছুই গ্রাফিক্স আর এগুলো তৈরি করাকে বলা হয় গ্রাফিক্স ডিজাইনিং। যারা এগুলো বানায় তাদেরকে বলছি Graphics Designer.
এটি হলো একটি সৃজনশীল ও মননশীল পেশা। একজন আর্টিস্ট বা গ্রাফিক্স ডিজাইনার তার ক্রিয়েটিভিটি ব্যবহার করে ছবি বা চিত্রের মাধ্যমে এর দর্শকদের বিভিন্ন মেসেজ দিতে চেষ্টা করে।
শুধু যে কথা বা শব্দের মাধ্যমেই মেসেজ দেওয়া যায় সে ধারণা ঠিক না। ছবি বা চিত্রের মাধ্যমেও মাসের কাছে অনেক মেসেজ পৌছে দেওয়া যায়। আর এই উপায়টি অনেক বেশি অ্যাঙ্গেজিং ও দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইন কেন শিখবো?
Graphics Design কেন শিখবেন সে প্রশ্নের একাধিক উত্তর রয়েছে। যারা ক্রিয়েটিভ কাজকর্ম করতে চায় তাদের কাছে এটি চিন্তা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম।
গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার কয়েকটা অন্যতম কারণ নিচে বর্ণনা করা হলো।
- ক্রিয়েটিভ কাজ: দুনিয়ায় নানান ধরণের পেশা রয়েছে। তবে এমন খুব কম পেশা রয়েছে যেখানে কাজকর্ম এত অনেক বেশি সৃজনশীল। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার তার প্রতিটি আলাদা প্রজেক্টে ভিন্ন ভিন্ন ধারণা প্রয়োগ করতে পারেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন মানে শুধু কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশন বা টুলস ব্যবহার জানা নয়। এখানের প্রতিটি কাজে ভিন্ন ভিন্ন ধারণা, ভাবনা বা মেসেজ প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। তাই আপনি যদি প্রতিনিয়ত একই কাজ করতে বিরক্তবোধ করেন তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন হতে পারে আপনার আইডিয়াল চয়েস।
- ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ: এটি একটি বড় সেক্টর। গ্রাফিক্স ডিজাইনের মধ্যে নানান ধরনের কাজ রয়েছে, UI ডিজাইন, বুক কাভার ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন, ফটো ম্যানুপুলেশন, টিশার্ট ডিজাইন, প্রোডাক্ট মকাপ ডিজাইন ইত্যাদি।
অনেক ডিজাইনার একা একটি বিষয়ে কাজ করে আবার অনেকে একাধিক বিষয়ে এক্সপার্ট। বর্তমানে সমস্ত কিছু ডিজিটাল হওয়াতে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা ও মূল্যায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চেষ্টা করে লেগে থাকলে গ্রাফিক্স ডিজান হতে পারে আপনার জন্য একটি উত্তম ক্যারিয়ার অপরচুনিটি।
- রিমোট কাজের সুযোগ: গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে ইন-অফিস জবের অনেক সুযোগ রয়েছে। অনেক আইটি কোম্পানি, মার্কেটিং এজেন্সি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফুল টাইম গ্রাফিক্স ডিজাইনার নিয়োগ দিয়ে থাকে। ফুল টাইম অফিস জবের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজের বহু সুযোগ রয়েছে। Fiverr, Design99, Upwork এর মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে রিমোট কাজ খুঁজে ঘরে বসেই আপনি আয় করতে পারবেন।
- প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ: এরকম কম পেশা রয়েছে যেখানে প্যাসিভ ইনকাম করা যায়। গ্রাফিক্স ডিজাইন তাদের মধ্যে অন্যতম। গ্রাফিক ডিজাইন শিখে আপনার দক্ষতাকে ব্যবহার করে প্যাসিভ ইনকাম তৈরি করা সম্ভব। এটি করার জন্য প্রথমে কিছু পরিশ্রম এবং পরিকল্পনা প্রয়োজন। যেমন: Freepik, Shutterstock এর মতো প্ল্যাটফর্মে illustration, vector art, icon ইত্যাদি বিক্রি করা।
গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার সহজ ধাপগুলো
গ্রাফিক্স ডিজাইনিং যতটা না টেকনিক্যাল বিষয় তার চেয়ে বেশি কনসেপচুয়াল। গ্রাফিক্স ডিজাইন করার যেসব টুলস বা সফটওয়ার রয়েছে আপনি হয়তো সেগুলো আয়ত্তে আনতে পারবেন। কিন্তু যদি আইডিয়া, ইমাজিনেশন ভালো না হয় তাহলে ডিজাইন সুন্দর হবে না।
তবে গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার জন্য শুরুতে আইডিয়া ডেভেলপমেন্ট নয়, বরং টুলস শেখাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। এজন্য প্রয়োজনীয় কিছু সফটওয়্যার শিখতে হয়। গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার জন্য কী কী প্রয়োজন হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
গ্রাফিক্স ডিজাইন সফটওয়্যার কোনগুলো?
ইন্টারনেটে খুঁজলে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার অসংখ্য সফটওয়্যার পাবেন। কিন্তু সবগুলো সফটওয়ার সমানভাবে জনপ্রিয় ও দরকারি না।
গ্রাফিক্স দুই ধরনের। একটি হলো স্টিল গ্রাফিক্স এবং আরেকটি হলো মোশন গ্রাফিক্স। স্টিল গ্রাফিক্স তৈরি করতে যেসব সফটওয়্যার প্রয়োজন হয় এবং এক্সপার্টরা ব্যবহার করেন সেগুলো একটা তালিকা ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেওয়া হলো।
১. Adobe Photoshop
ছবি এডিট করা কিংবা ডিজিটাল আর্ট তৈরির জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যার হলো এই Adobe Photoshop. লেয়ারভিত্তিক ছবি এডিটিং, ছবি ম্যানিপুলেশন কিংবা ছবি রিটাচের জন্য এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড টুল হিসেবে পরিচিত।
এছাড়াও ব্যানার, পোস্টার, সোশ্যাল মিডিয়া গ্রাফিক্স ডিজাইন সহ আরও অনেক কাজে ব্যবহার করা হয় অ্যাডোবি ফটোশপ দিয়ে।
২. Adobe Illustrator
ভেক্টর গ্রাফিক্স তৈরির জন্য একটি অন্যতম প্রধান সফটওয়্যার হলো Adobe Illustrator। লোগো, আইকন, ইনফোগ্রাফিক, এবং ইলাস্ট্রেশন তৈরির ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকরী। ভেক্টর ডিজাইনগুলো পিক্সেলেটেড হয় না বিধায় প্রিন্ট ও ওয়েবের জন্য এটি জনপ্রিয়।
৩. Adobe InDesign
ম্যাগাজিন, ব্রোশিওর, ই-বুক, এবং প্রিন্টেড ডিজাইন লেআউট তৈরি করার জন্য যে সফটওয়্যারটি বহুল ব্যবহৃত হয় সেটি হলো Adobe InDesign। এটিতে পেইজের লেআউট ডিজাইন এবং টেক্সট ফরম্যাটিং করার জন্য প্রয়োজনীয় টুলস রয়েছে। প্রিন্টিং প্রতিষ্ঠানগুলো এই সফটওয়্যারটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে থাকে।
৪. Figma
ফিগমা হলো ক্লাউড ভিত্তিক একটি ডিজাইনিং টুল। যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অ্যাপের UI/UX ডিজাইন করে তাদের সবচেয়ে পছন্দের টুল হচ্ছে এই Figma.
এছাড়া এটি ক্লাউড ভিত্তিক হওয়ায় কোনো প্রজেক্ট একাধিক ব্যক্তির সাথে শেয়ার করা যায়। কোলাবোরেশান ও টিমওয়ার্কের সুযোগ থাকায় এটি খুবই কার্যকরী ডিজাইনিং টুল।
৫. Blender
3D মডেলিং, অ্যানিমেশন কিংবা ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট তৈরির জন্য Blender একটি জনপ্রিয় ও ওপেন সোর্স সফটওয়্যার। প্রফেশনাল ও বিগিনার 3D ডিজাইনারদের জন্য এটি একটি শক্তিশালী টুল। ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারাও এটির একটি জনপ্রিয় দিক।
৬. CorelDraw
এটি ভেক্টর গ্রাফিক ডিজাইনের জন্য Adobe Illustrator-এর একটি বিকল্প সফটওয়্যার। লোগো তৈরি, প্যাকেজিং ডিজাইন ছাড়াও অন্যান্য ভেক্টর আর্ট তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়। অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটরের পাশাপাশি প্রফেশনালদের কাছে এটিও বেশ জনপ্রিয়।
৭. Canva
একটা কথা আছে না? “ছোট মরিচের ঝাঁজ বেশি” Canva এর ক্ষেত্রে এই কথাটি প্রযোজ্য। ক্যানভা হলো অত্যন্ত ইউজার ফ্রেন্ডলি কিন্তু নতুনদের জন্য খুবই পাওয়ারফুল একটি ডিজাইনিং সফটওয়্যার।
যারা এক্সপার্ট ডিজাইনার নন, তারাও এটি ব্যবহার করে অল্প সময়ের মধ্যে সহজেই প্রেজেন্টেশন স্লাইড, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ব্যানার, ফ্লায়ার তৈরি করতে পারেন। এখানে ফ্রি অনেক রিসোর্স ও টেমপ্লেট থাকাতে বিগিনারদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ও হ্যান্ডি একটা টুল।
এই সফটওয়্যার বা টুলগুলো প্রতিটি আলাদা আলাদা কাজের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এর বাইরেও গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজে ব্যবহার করা হয় এরকম অনেক সফটওয়্যার রয়েছে। এখানে শুধুমাত্র জনপ্রিয় কিছু সফটওয়্যারের তালিকা ও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়েছি।
গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য ওয়েবসাইট
এবার চলুন কিছু ওয়েবসাইটের সাথে পরিচিত হই যেগুলো প্রফেশনাল ডিজাইনাররা কিংবা বিগিনাররা ব্যবহার করে।
Dribbble
Dribbble হলো একটি অন্যতম জনপ্রিয় ডিজাইন কমিউনিটি যেখানে গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা তাদের কাজ শেয়ার করে। এখানে বিভিন্ন প্রজেক্ট এবং ডিজাইন দেখে ডিজাইননের আইডিয়া পাওয়া যায় এবং শেখার সুযোগ রয়েছে।
Behance
ডিজাইনারদের জন্য Behance হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট। তবে Behance শুধু পোর্টফোলিও শেয়ার করার জন্যই নয়, বরং বিভিন্ন প্রজেক্ট দেখে নতুন আইডিয়া নেওয়া এবং কমিউনিটির মাধ্যমে শেখার সুযোগ দেয়।
যেকোনো বিষয়ে আইডিয়া খোঁজার অন্যতম জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে Pinterest. এর মাধ্যমে ডিজাইনার তাদের কোনো প্রজেক্ট তৈরির পূর্বে অন্যদের একই ধরনের প্রজেক্ট দেখে আইডিয়া নিতে পারে। এটি শুধু গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের কাছেই জনপ্রিয় নয়, বরং অন্য ক্রিয়েটিভ ব্যক্তিরাও পিন্টারেস্টে বেশ অ্যাক্টিভ।
Freepik
Freepik হচ্ছে স্টক ইমেজ ও স্টক টেমপ্লেট শেয়ারিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। এখানে যেকোনো ধরনের ডিজাইনের স্টক ইমেজ, টেমপ্লেট ও অন্যান্য রিসোর্স পাওয়া যায়। ফ্রিপিকে vector, mockup, PSD, icon, image ইত্যাদি পাওয়া যায়। এসব রিসোর্স নতুন লার্নারদের প্র্যাক্টিসের কাজে খুবই সহায়তা করে।
Icon Finder
Icon, 3D illustration, sticker খোঁজার অন্যতম জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে iconfinder.com. এখানে একই সাথে ফ্রি ও প্রিমিয়াম রিসোর্স পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন তৈরিতে আমাদের আইকনের প্রয়োজন হয়, এগুলো এখান থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
Flat Icon
বিনামূল্যে icon খোঁজার আরেকটি ওয়েবসাইট হলো flaticon.com. এটি iconfinder এর একটি বিকল্প ওয়েবসাইট। এখানে PNG, SVG, EPS, PSD এর মতো জনপ্রিয় ফাইল ফরম্যাটের রিসোর্স পাওয়া যায়।
ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশন স্কিল
ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশন স্কিলকে গ্রাফিক্স ডিজাইনের মেরুদণ্ড বলা হয়। এটি শেখা মানে শুধু সফটওয়্যার ব্যবহার করা নয়, বরং দর্শকের সাথে ভিজ্যুয়ালের মাধ্যমে কার্যকরভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা। দক্ষ ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশন ডিজাইনারদের কাজকে আরও অর্থবহ এবং ফলপ্রসূ করে তোলে।
এটি সাধারণত বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল মাধ্যম, যেমন ছবি, গ্রাফ, চার্ট, ভিডিও, আইকন, ইনফোগ্রাফিক, স্লাইড এবং অ্যানিমেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।
একজন ডিজাইনার শুধু সফটওয়্যার ব্যবহারে পারদর্শী হলেই হবে না বরং তাকে স্ট্রং ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশন স্কিল হোল্ড করতে হবে।
এই দক্ষতা বৃদ্ধি করতে ইমাজিনেশন ক্ষমতা বাড়াতে হবে, আইডিয়া জেনারেট করতে হবে, বিভিন্ন ডিজাইন খুব ভালোভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে।
সঠিক গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স নির্বাচন করার টিপস
গ্রাফিক ডিজাইন শেখার জন্য সঠিক কোর্স নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি আপনার শেখার অভিজ্ঞতা এবং পরবর্তী ক্যারিয়ার গঠনে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে।
কোর্স নির্বাচনের জন্য নিজের লক্ষ্য, কোর্সের বিষয়বস্তু এবং ইন্সট্রাক্টরের দক্ষতার প্রতি মনোযোগ দেওয়া সহ আরো কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখবেন তা সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া যাক। গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স নির্বাচন করার কিছু টিপস নিচে উল্লেখ করা হলো-
- কোর্সের বিষয়বস্তু যাচাই করুন: শুধু Graphics Design কোর্স নির্বাচনের ক্ষেত্রে নয়, যেকোনো কোর্স নেওয়ার আগে সেটার outlines ভালো করে পর্যবেক্ষণ করুন। আপনার কাঙ্ক্ষিত সকল বিষয় সেখানে শেখানো হবে কিনা, রিয়েল-ওয়ার্ল্ড প্র্যাক্টিস আছে কিনা সবকিছু খেয়াল করুন।
- কোর্স ইনস্ট্রাক্টর সম্পর্কে জানুন: কোনো কোর্সে এনরোল করার আগে সে কোর্সের ইনস্ট্রাক্টর সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর রাখা প্রয়োজন। তিনি প্রফেশনাল লাইফে কতটা জনপ্রিয় ও সাকসেসফুল তা অবশ্যই যাচাই করতে হবে। কোর্স ইনস্ট্রাক্টরের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে কোর্সে এনরোল করা উচিত।
- প্রজেক্ট ও সার্টিফিকেট সুবিধা: আপনি যে কোর্সটি কিনতে চাচ্ছেন সেটিতে real-world প্রোজেক্ট দেখানো হবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। ইমাজিনারি প্রজেক্ট থেকে শেখার চেয়ে বাস্তব প্রজেক্ট দেখার মাধ্যমে শেখা অবশ্যই বেশি কার্যকর। এছাড়াও আপনার কাঙ্ক্ষিত কোর্সটি কম্পলিশন সার্টিফিকেট অফার করছে কিনা তা জানুন। অবশ্যই সার্টিফিকেটের একটি ভ্যালু আছে।
- রিভিউ ও রেটিং দেখুন: কোর্সটি পূর্বে করেছে এমন লার্নাররা সে কোর্স সম্পর্কে কী রিভিউ দিচ্ছেন তা দেখা খুব দরকারি। কোর্সের রিভিউ ও রেটিং দেখলে আমরা সে কোর্সের কোয়ালিটি সম্পর্কে অনেকটাই ধারণা করতে পারি, যদি না রিভিউগুলো ফেইক হয়!
- কোর্সের মূল্য বিবেচনা করুন: বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানই গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স অফার করছে। তবে তাদের মধ্যে তুলনামূলক কম মূল্যে কারা ভালো কোর্স অফার করে তা যাচাই-বাছাই করুন। এছাড়া ফ্রি কোর্সের জন্য YouTube, Udemy, Coursera-তে দেখতে পারেন।
ফ্রি কোর্স সম্পর্কে একটা কথা! যারা অনেক বেশি ডেডিকেটেড ও পরিশ্রমী তাদের জন্য ফ্রি কোর্সগুলো কার্যকর হলেও অনেকের জন্যই ফ্রি কোর্স খুব একটা কাজে আসে না। কেন?
ফ্রি কোর্সগুলোতে কাউকে মেন্টর হিসেবে পাওয়া যায় না। আর নতুন কিছু শেখার জন্য একজন ভালো মেন্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা প্রিমিয়াম কোর্সে পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রিমিয়াম কোর্সে রিয়েল-টাইম সাপোর্ট, ফিডব্যাক, সাজেশন পাওয়া যায়। যা একজন বিগিনারের জন্য খুবই সহায়ক।
আপনার জন্য বেস্ট গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স
গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার জন্য অনলাইনে অনেক কোর্স রয়েছে। যারা ভালো ইংরেজি জানেন তাদের জন্য Udemy, Coursera তে কোয়ালিটি কোর্স রয়েছে। তবে এসব প্ল্যাটফর্মে কোর্স করার মূল বাধা হচ্ছে ভাষাগত জটিলতা ও কোর্স আউটলাইন। ইউডেমি বা কোর্সেরার কোর্সগুলো ইংরেজি ভাষায় এবং এগুলো বেশিরভাগই বিগিনারদের জন্য ডিজাইন করা হয়নি।
বাংলাদেশেও অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার জন্য কোর্স অফার করছে। তবে দাম, কোর্স আউটলাইন এবং ইনস্ট্রাক্টরের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করলে Dusrasoft এর Professional Graphics Design Course-টি সময়ের সেরা!
আমাদের কোর্সের বিষয়বস্তু ও সুবিধাসমূহ
যারা একদম বেসিক থেকে প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে চান তাদের জন্য এই কোর্সটি পারফেক্ট। ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশন স্কিল শেখানো থেকে শুরু করে Adobe Photoshop, Adobe Illustrator এর প্রয়োজনীয় সকল টুলস শেখানো হবে।
আমাদের কোর্সটি পরিচালনা করেন একজন দক্ষ ও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এক্সপার্ট গ্রাফিক্স ডিজাইনার। আমাদের Professional Graphics Design কোর্সে ডিজাইনিং সফটওয়্যার ও টুলস শেখানোর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কীভাবে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়, কীভাবে প্রথম কাজ পেতে হয় তা বিস্তারিত হাতে-কলমে শেখানো হবে।
এছাড়াও কোর্স শেষে আমরা আপনার জন্য কাজ বা ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে দেব। তবে এটা নির্ভর করছে আপনার দক্ষতার উপরে।
কোর্স ফি ও কোর্সের সময়কাল
আমাদের প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সে অনলাইন এবং অফলাইনে এর জন্য ১৬৫০০ টাকা নিয়ে থাকি। আমাদের কোর্সের মোট সময়কাল ৬৪ ঘন্টারও বেশি।
গ্রাফিক ডিজাইন শেখার পর আয়ের সুযোগ
গ্রাফিক ডিজাইন শিখে বিভিন্নভাবে আয় করার সুযোগ রয়েছে। নিচে কয়েকটি মাধ্যম উল্লেখ করা হলো-
- ফ্রিল্যান্সিং: গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকরী মাধ্যম হলো ফ্রিল্যান্সিং। Fiverr, Upwork, Freelancer.com, Guru, Design99 এর মতো প্ল্যাটফর্মে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে পারেন।
- প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ: আগেই বলেছি, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল আর্ট, গ্রাফিক্স, টেমপ্লেট বিক্রি করে প্যাসিভ ইনকাম করা যায়।
- রিমোট জব: ফ্রিল্যান্সিংয়ের পাশাপাশি ঘরে বসেও বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে রিমোট জব করার সুযোগ আছে। যেমনঃ Freepik, Adobe Stock ইত্যাদি।
শেষকথা
গ্রাফিক ডিজাইন শেখা কেবল আপনার চাকরি বা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুযোগ তৈরি করবে না, এটি ব্যক্তির সৃজনশীলতা বিকাশেও সাহায্য করবে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের দক্ষতা আপনাকে ডাইভার্সিফাইড ও লং-টার্ম ক্যারিয়ার গড়তেও সহায়তা করবে।
আজকের ব্লগে চেষ্টা করেছি, নতুনদের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার খুঁটিনাঁটি তথ্য তুলে ধরতে। এছাড়াও এ বিষয়ে যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদেরকে হোয়াটসঅ্যাপে +880 1714-691963 মেসেজ দিতে পারেন। সময় নিয়ে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!